Pregnancy Health (গর্ভাবস্থায় নারীর সুস্থতায় করণীয়)

 

Pregnancy Health (গর্ভাবস্থায় নারীর সুস্থতায় করণীয়), প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার পর করণীয়, গর্ভাবস্থায় কি কি শাক খাওয়া যাবে, গর্ভাবস্থায় কি কি ফল

 Pregnancy Health (মাতৃত্বকালীন সুস্থতা):

প্রত্যেক নারীর জীবনে মাতৃত্ব অন্য ধরনের মাত্রা যোগ করে। এসময় প্রত্যেক নারীর শরীরে,মনে বিভিন্নরকম পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। প্রতিটি নারী চাই একটি সুস্থ সবল বাচ্চা প্রসব করতে।এসময় নানা ধরনের জটিলতাও দেখা যায়। যেহেতু এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া তাই এর সুস্থতাও ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। এসময় নারীদের দেহে ৩ ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। 


১)শারীরিক। 

২)মানসিক।

৩)মন:স্থাতিক।


১) শারীরিক পরিবর্তন : 

মাতৃত্ব একটি বিশেষ প্রক্রিয়া।একটি সন্তান পৃথিবীতে আনতে একজন মা কে বিভিন্ন শারীরিক পরিবর্তনের মধ্যে যেতে হয়।এসময় নারীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অসুস্থ থাকে।শারীরিক বিভিন্ন পরিবর্তনের সাথে অভ্যস্থ হতে শেখে।এসময় নারীদের শরীরের সন্তান জন্মদানের অঙ্গ গুলো সন্তান জন্মদানের জন্য প্রস্তুতি নেয়।ুসময় শারীরিক পরিবর্তনের মধ্যে লক্ষনীয় বিষয় গুলো হলো:

ক) বমি হওয়া:

এক্ষেত্রে অনেকের বমির সময়কাল০-৩ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে ঠিক হয়ে যায়। আবার অনেকের ১ম ৩ মাস এবং শেষ ৩ মাস বমি হয়। আবার অনেকের pregnancy এর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বমি হতে পারে।এক্ষেত্রে ডা.এর পরামর্শে বমির ঔষধ সেবন করলে বমি কমানো যায়। 

খ) খাবারে অরুচি:

এসময় হরমোনাল problem গুলো বেড়ে যায়। হরমোনাল বিভিন্ন সমস্যার কারনে মায়েরা খাবারে গন্ধ অনুভব করে এবং খাওয়ার রুচি কমে যায়। অনেক সময় অনেক খাবার totally খেতেই পারেনা, একেবারে সেসব খাবার বাদ পড়ে যায়। 

গ) পেট বড় হয়ে যাওয়া:

গর্ভাস্থতায় সন্তান পেটের মধ্যে আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে।জন্মের আগ পর্যন্ত ওজন ২.৫-৪ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।তবে ব্যক্তিবিশেষে এই ওজনের কমবেশি হতে পারে। এসময় পেট সামনের দিকে বেরিয়ে আসে। সাধারণত ৫ মাস থেকে এই পরিবর্তন প্রকট হয় তবে ক্ষেত্র বিশেষে এ পরিবর্তনের তারতম্য হতে পারে। এসময় মায়েদের হাঁটাচলা,উঠাবসা,সুয়ে থাকা,কাত হওয়া,কোনো কাজকর্ম বেশিক্ষণ করা অনেক কস্টকর।এছাড়া ওয়াশরুমে উঠা বসা করতেও সমস্যা দেখা যায়। 

ঘ) শরীরে ব্যাথা অনুভব করা:

এসময় সন্তান জন্মদানের সাথে জড়িত সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রস্তুত হতে থাকে।ফলে ৬ মাস থেকে কোমর,মাজা,পিঠ,মাথা, এবং পুরো শরীর ব্যাথা হয়ে থাকে।অনেকে ব্যাথায় বিছানা থেকে উঠতেও পারেননা।তবে এসময় কোনো ব্যাথানাশক মেডিসিন না খাওয়াও উত্তম।

ঙ)শরীরে পানি চলে আসা:

এসময় শরীরে পানি চলে আসে।অনেকের হাত পা ফুলে যায় এবং ব্যাথায় চাবাতে পারে।হাঁটাচলা করতে সমস্যা হয়।

চ)নাক বা দাঁত দিয়ে রক্ত পড়া অথবা ব্যাথা করা:

এসময় নাক অথবা দাঁত দিয়ে রক্ত পড়ে।অনেকের দাঁতেও প্রচন্ড ব্যাথাও অনুভূত হয়।এসময় ডা.পরামর্শে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট এবং ভিটামিন গ্রহন করলে এসমস্যা দূর করা যায়।

ছ) শরীর দূর্বল হয়ে যাওয়া: 

Pregnancy তে অনেকের রুচি কমে যায় এবং বমি হবার ফলে শরীর আস্তে আস্তে দূর্বল হওয়ার প্রবনতা দেখা যায়। এসময় শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ করতে হবে।

জ) Skin এবং শরীরের পরিবর্তন : 

প্রেগনেন্সি তে skin এবং শরীরের ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়। কেউ pregnancy তবে মোটা হয়ে যায় কেও বা চিকন, কেউ সুন্দর আবার কেও কালো। এসব কিছু হয় হরমোনের প্রভাবে।হরমোন এগুলো balance করে।অনেকের মুখ তৈলাক্ত হয়ে ব্রন বার হয় আবার অনেকের মুখ dry হয়ে ফেটে যায়। ,তবে ঘাবড়ানোর কোনে কারন নেই এগুলো স্বাভাবিক বিষয়।

২)মানসিক পরিবর্তন : 

এসময় একটি মেয়ে "মা" তে পরিনত হয়। এসময় তাদের বিভিন্ন মানসিক Development সাধিত হয়।এসময় মেয়েরা অনেক সময় অস্বাভাবিক আচরনও করতে থাকে।মানসিকভাবে অনেকেই ভেংগে পড়ে এজন্য pregnancy তে মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার গুরুত্ব অনেক এবং mentally preparation নিতে হয় আগে থেকেই।এসময় অনেকের অনেক ধরনের পরিবর্তন সাধন হয়। যেমন:

১)এসময় মেয়েরা আগের থেকে আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে শেখে।তাদের maturity বাড়ে।

২)এসময় মেয়েরা সবার সাথে থাকতে পছন্দ করে একা থাকতে ভয় পায়।

৩)এসময় কাছের মানুষের যত্ন খুব পছন্দ করে।

৪)এসময় অনেকের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। 

৫)হরমোনাল কারনে অনেকসময় রাগ, জেদ, অভিমান বাচ্চাদের মতো হয়ে যায়। 

৬)বিভিন্ন ধরনের কাল্পনিক জিনিস ভাবতে পছন্দ করে। 

৭)প্রথমবার মা হবার ক্ষেত্রে অনেকেই লজ্জায় অথবা হীনমন্যতায় ভোগে। 

৮)অনেকেই নিজেদের শারীরিক পরিবর্তন দেখে depression এও ভোগেন।


৩)মন:স্থাতিক পরিবর্তন : 

প্রেগনেন্ট অবস্থায় একজন নারীর মনের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন সাধিত হয়।হরমোনাল কারনে অনেক সময় মন ভালো লাগে আবার অনেক সময় মন খারাপ লাগে। তবে এসময় নারীরা মনের মধ্যে নানারকম ইচ্ছা বা শখ পোষন করে। মনের ইচ্ছা মত চলতে পছন্দ করে।যখন যেটা মন চাই সেটাই খাওয়ার জন্য অথবা পাওয়ার জন্য আবদার করে থাকে।

এসময় সকলের উচিত pregnant নারীদের মনের বাসনা যতটুকু পসিবল পূর্ণ করা।

এই তিনটা বিষয় একে অপরের স্বাস্থ্যের সাথে সম্পর্কিত।

প্রেগনেন্ট অবস্থায় নারীদের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়।এসময় নারীদের অধিক পুষ্টির এবং অধিক যত্নের প্রয়োজন হয়। pregnant অবস্থায় নারীদের যত্ন:

১)পুষ্টিকর খাবার: 

প্রেগনেন্ট অবস্থায় একজন নারীর শরীরে প্রচুর পুষ্টির প্রয়োজন হয়।কারন এসময় মাতৃগর্ভে নতুন একটা প্রান বেড়ে উঠে।এজন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহন করতে হবে। 

২)পর্যাপ্ত পানি:

গর্ভাস্থায় প্রচুর পানির প্রয়োজন।এসময় প্রচ্চুর পানি পান করতে হবে। এসময় পানির ঘাটতির কারনে নানা ধরনের জটিলতা দেখা যায়।কোষ্ঠকাঠিন্য সহ, বাচ্চার পানি শুকিয়ে যাওয়া সহ বিভিন্ন গুরুতর সমস্যা দেখা যায়।

প্রেগনেন্ট

একজন গর্ভবতী নারীর ঘুমের প্রয়োজনীয়তা স্বাভাবিকের তুলনার বেশি।পূর্ণাঙ্গ ঘুম একজন গর্ভবতী নারীর শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করে।গর্ভাবস্থায় রাতে ৬-৮ ঘন্টা ঘুমের পাশাপাশি দিনেও ২ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। ঘুমের ফলে গর্ভস্থ শিশুও পূর্ণ বিশ্রাম লাভ করে।

৪) Doctor Check up : 

প্রেগনেন্ট অবস্থায় অবশ্যই ডা.এর চেক আপের মধ্যে থাকতে হবে। ডা.প্রয়োজনে কত বার  চেক আপ করতে হবে তা বলে দিবে।

৫)পরিমিত ব্যায়াম:

গর্ভাবস্থায় সবার ক্ষেত্রে ব্যায়াম প্রযোজ্য নয়। অনেকেই অনেক critical situation এ থাকেন সেক্ষেত্রে ডা.পরামর্শ নিতে হবে।যদি সবকিছু নরমাল থাকে তাহলে সকালে এবং বিকালে হালকা হাঁটাহাটি করলে শরীর ও মন ভালো থাকে।

৬)ভারী কাজ পরিহার:

গর্ভাবস্থায় একদমই ভারী কাজ করা উচিত নয়।এতে গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হয়।অনেক সময় মিসক্যারেজের মতো সমস্যাও দেখা যায়। তলপেটে চাপ পড়ে এধরনের কাজ থেকে সবসময় বিরত থাকতে হবে।

৭) ধূমপান, অ্যালকোহল,মাদকদ্রব্য এড়িয়ে চলা: 

নেশা জাতীয় জিনিস গর্ভস্থ শিশুর জন্য হুমকিস্বরূপ। এসবের সংস্পর্শে থাকলে শিশুর নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় এসবের গন্ধ এবং সংস্পর্শে গর্ভবতী নারী অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন।তাই এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।

৮)নিয়মিত ঔষধ সেবন :

গর্ভাবস্থায় মা দের জন্য নির্ধারিত কিছু মেডিসিন খেতে হয় যেগুলো নিয়ম মেনে না খেলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা,দিতে পারে।যেমন:আয়রন,ভিটামিন, খনিজ লবন,জিংক ইত্যাদি।রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের পরামর্শে এসব মেডিসিন গ্রহন করতে হবে।তবে গর্ভাবস্থায় অন্যান্য মেডিসিন ব্যবহার পরিহার করতে হবে।যেমন : ব্যাথা নাশক,প্যারাসিটামল সহ অন্যান্য মেডিসিন।এসব মেডিসিন গর্ভাস্থ শিশুর জন্য হুমকিস্বরূপ।


গর্ভধারন একটি সুন্দর সাবলীল, প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। একজন সুস্থ মা ই পারেন একটি সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে।সুস্থ সন্তান সমাজের সম্পদ। সরকারি বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করা হয় গর্ভাবস্থায়।গর্ভবতী নারীদের পুষ্টি সেবা নিশ্চিত করতে সরকার বিভিন্ন ভাতার ব্যবস্থা এবং সরকারি সুবিধাও দিয়ে থাকেন।বর্তমানে এসব ব্যবস্থা গ্রহনে মৃত্যুহার কমানো সম্ভব হয়েছে।গর্ভবতী নারীদের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়। তাই তাদেরকে উপরোক্ত বিষয় গুলো অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।মনে রাখতে হবে একজন সুস্থ মা ই পারেন একটি সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে।


Post a Comment

Previous Post Next Post